লিটন মাহমুদ,মুন্সিগঞ্জ:

ঘটকের মাধ্যমে পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও মিলছে না শিউলি আক্তার পিংকির ২ মাসের কন্যা সন্তানের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর অধিকার।

এমনই অভিযোগ উঠেছে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ ধামারন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা সোবহান শেখের ছেলে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ রয়েছে বিষয়টি সমাধানের জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তি তোয়াক্কা করেন না চেয়ারম্যান ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের।

স্ত্রী-সন্তানকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে উল্টো নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিউলি আক্তার।

‎এ বিষয়ে গত ২৭ এপ্রিল (রোববার) দুপুরে টঙ্গীবাড়ি থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। জিডি নং-১১১৫।

থানায় দায়ের কৃত অভিযোগ পত্রের বিবরণে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৯ মে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার আড়িয়ল দক্ষিণ কুরমিরার দরিদ্র বাবুল সাজীর মেয়ে শিউলী আক্তার পিংকি(৩১) এর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ধামারন গ্রামের সোবহান শেখের ছেলে জাকির হোসেন শেখ(৪৬) এর সাথে।

এটি পিংকির দ্বিতীয় বিয়ে হলেও জাকিরের তৃতীয় বিয়ে। এর আগে প্রবাসী এক ছেলের সাথে টেলিফোনে পিংকির বিয়ে হলেও তা আর সংসার জীবনে গড়ায়নি।

তবে জাকির শেখ এর আগে ২টি বিয়ে করে এবং তার পূর্বের সংসারের ২টি ছেলে মেয়ে রয়েছে।

‎ভুক্তভোগি পিংকির অভিযোগ- বিয়ের শুরুর ১ মাস সবাই আমার সাথে ভাল ব্যবহার করলেও যখন আমি গর্ভবতী হই, তখন থেকেই জাকির ও তার ছোট বোন ছানোয়ারা আক্তার(৩৫) এবং আগের সংসারের ২ ছেলে মেয়ে সহ পরিবারের সবাই দিন রাত আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং মারধর সহ আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। যা সইতে না পেরে এক পর্যায়ে আমি এক কাপরে বাবার বাড়ি চলে আসি।

‎পিংকির অভিযোগ- মূলত আমার স্বামীর আগের ঘরের ২টি সন্তান থাকা সত্ত্বেও কেনো আমি নিজে সন্তান নিলাম,এটাই ছিল আমার একমাত্র অপরাধ।

এমনকি এই সন্তানটি অবৈধভাবে গর্ভপাত করানোর জন্যও আমার স্বামী ও তার বোন আমাকে জোড় করে ক্লিনিকে নিয়ে যায়। সব শেষে ৪ মাসের গর্ভাবস্থায় এসব অত্যাচার সইতে না পেরে আমি বাবার বাড়িতে এসে আশ্রয় নেই।

তখন জাকির আমাকে হুমকি দিয়েছিল- ভবিষ্যতে যেনো এই সন্তানের পিতৃপরিচয় না চাই। নাহলে আমার সন্তান ও আমাকে সে জানে মেরে ফেলবে।

এখন আমার সন্তান পৃথিবীর আলো দেখেছে। কিন্তু ২ মাসেও ওর বাবার ভোটার আইডি চেয়েও পাচ্ছিনা সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করার জন্য। তাই ভোটার আইডির ফটোকপি চাইতে রোববার তার বাড়িতে গেলে জাকির ওর তার পরিবারের লোকজন আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি সহ আমাকে মারতে আসে এবং আমাকে জানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

এ সময় আমার সাথে সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেয়। তাই আমি আমার ও আমার শিশু কন্যার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে টঙ্গীবাড়ি থানায় এসে সাধারন ডায়েরী করেছি। আমি আমার ও আমার সন্তানের ন্যায্য অধিকার চাই।

‎বিষয়টি নিশ্চিত করে,টঙ্গীবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো.মহিদুল ইসলাম বলেন-একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, আমরা বিষয়টি দেখছি এবং আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে দ্রুত ভুক্তভোগী ও তার শিশু সন্তানের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের জন্য।